এণ্ডোমেট্রিওসিস (Endometriosis)
ইহা নারীদের এক বিশেষ ধরণের রোগ যাতে জননতন্ত্রের বিভিন্ন অংশ আক্রান্ত হয়। এরোগের আক্রমণস্থল হচ্ছে জরায়ু, যোনিদেশ, ডিম্বাশয় এবং ডিম্বনালী। এ সকল স্থানে মিউকাস টিস্যু বা এন্ডোমেট্রিয়াম জাতীয় টিস্যু অল্প অল্প জমা হতে থাকে যার ফলে সংশ্লিষ্ট স্থানসমূহ বেদনান্বিত ও স্ফীত হয়ে নানারূপ রোগলক্ষণ প্রকাশ পায়। একেই এণ্ডোমেট্রিওসিস (Endometriosis) বলে। দীর্ঘদিন এ রোগে ভুগলে বন্ধ্যাত্ব দেখা দেয়।
কারণঃ (১) হর্মোন নিঃসরণের গোলযোগ (২) বিলম্বে বিবাহ, বন্ধ্যাত্ব, অপারেশন, প্রসবকালীন গোলযোগ, কৃত্রিম উপায়ে সংগমক্রিয়া, জোরপূর্বক গর্ভপাত (৩) এ রোগ জরায়ুর বাইরে ও ভিতরে হতে পারে। বাইরের দিকে হলে দেখা যায় যে, মিউকাস মেমব্রেনের উপর কোন কোন স্থানে মিউকাস অংশ জমে প্যাচ তৈরী হয়েছে (৪) কখনও কখনও এর সাথে ফাইব্রয়িড (Fibroid) দেখা যায়। (৫) কখনও হর্মোনের ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয় এবং জরায়ুর ঐ সব ভিতরের অংশের প্যাচ হতে বেশী পরিমাণ ঋতুস্রাব নির্গত হয় (৬) এ রোগ ওভারিতে হলে বাইরের দিকে ছোট ছোট চকলেট বর্ণের cyst সৃষ্টি করে। এসব cyst ছোট ছোট মিউকাসের পেশীদ্বারা তৈরী। (৭) কখনও বা এরোগ ডিম্বাশয় ও ডিম্বনালীতে দেখা যায়। সাধারণত ডিম্বনালীর বাইরের দিকে মিউকাস এন্ডোমেট্রিওসিস দেখা যায় তবে বাইরের দিকে আক্রমণ খুব কম হয়। এছাড়া পেলভিক, পেরিটোনিয়াম, যোনিতে, যোনিনালীতে, ইউরেথ্রাতে, জরায়ুর লিগামেন্টে, ওভারিয়ান লিগামেন্টে এ রোগ সৃষ্টি হয়। (৮) এ রোগের আক্রান্ত স্থানগুলো সাধারণত কোমল প্রকৃতির হওয়ায় প্রাথমিক অবস্থায় নির্ণয় বেশ কঠিন।
প্রাথমিক লক্ষণঃ (১) ঋতুস্রাবে অনিয়ম, (২) স্রাবের সংগে অত্যধিক বা অল্প রক্ত পড়ে, (৩) ঋতুকালে পায়ুতে, পিঠে, তলপেটে বেদনা। (৪) দেহ হতে প্রচুর ঘাম নির্গত হয়।
অন্যান্য লক্ষণাবলীঃ ঋতুস্রাবের পরিবর্তে পানির মত পাতলা স্বচ্ছ শ্লেষ্মা নির্গত হয়। এর সাথে কোষ্ঠকাঠিন্য, মাথায় যন্ত্রণা, বিষন্নতা, দুর্বলতা, রক্তহীনতার লক্ষন বর্তমান থাকে। স্ত্রী-জননেন্দ্রিয় শুষ্ক, সহবাসে জ্বালা ও চুলকানি। প্রস্রাবের পর যোনিতে জ্বালা, বিলম্বিত ঋতুস্রাব, রজঃকষ্ট, জরায়ুর বেদনা। অনেকসময় ঋতুর আগে বা পরে নাক দিয়ে রক্তস্রাব হয়। ঋতুকালীন কেবলমাত্র সকালের দিকে চাপ চাপ স্রাব, স্রাব খুব হাজাকর। জ্বালাকর শ্বেতপ্রদর, অত্যন্ত দুর্গন্ধ ও চুলকায়। অনেক সময় শ্বেত প্রদরের স্রাব হলদে বা পাতলা পূঁজের মত পিচ্ছিল ও চটচটে হয়। এ স্রাব হাজাকর ও জ্বালাকর। বিলম্বিত ও স্বল্প রজঃ, জরায়ুতে খুব বেশী রক্তস্রাব, রক্তস্রাব সহ মাথাব্যথা। জিহ্বা ময়লাবরনযুক্ত, মুখে দুর্গন্ধ।
সঠিক মাত্রায় উপযক্ত হোমিও ঔষধ সেবন করলে কিছুদিনের মধ্যেই রোগী আরোগ্যলাভ করে সুস্থ জীবনযাপন করে।
ডা. বেনজীর আহমেদ একজন কনসাল্টেন্ট হোমিওপ্যাথ। বিশ্বখ্যাত হোমিওপ্যাথ প্রফেসর জর্জ ভিথোলকাসের নিকট প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। বিশ্বব্যাপী প্রফেসর জর্জের নিকট প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হোমিওপ্যাথের তালিকা দেখতে ক্লিক করুন।
- লিখেছেন ডা. বেনজীর
- আপডেট : ডিসেম্বর ৪, ২০১৬
- 0 মন্তব্য
0 মন্তব্য