হোমিও টিপস – ৬: কিভাবে হোমিও ওষুধ কাজ করে?
রোগীতে আমরা যত লক্ষণ প্রত্যক্ষ করি তার পিছনে কোন না কোন অন্তর্নিহিত কারণ আছে। লক্ষণসমূহ সেই সকল কারণেরই বহিঃপ্রকাশ বা ফল। উদাহরণস্বরূপ, ব্যথা, বেদনা, ফুলে যাওয়া, ফুসকুড়ি ইত্যাদি কোন না কোন সংক্রমণ (ইনফেকশন) বা অভ্যন্তরীণ ইরিটেশনের কারণে ঘটে থাকে। লক্ষণ প্রকাশ করে জীবনীশক্তি আমাদের কাছে সহায়তা প্রার্থনা করে যেন রোগ নিরাময়ে তাকে আমরা শক্তিশালী করা যায় এমন ওষুধ প্রয়োগ করি। হোমিওপ্যাথি বা সদৃশ চিকিৎসা বিধান রোগীর শরীরে বিরাজমান লক্ষণকে আরো শক্তিশালী করার জন্য রোগীর লক্ষণের সাথে সদৃশ ওষুধই প্রয়োগ করে। এভাবে সদৃশ ওষুধ প্রয়োগে জীবনীশক্তি তথা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে আরো শক্তিশালী করা হয় যাতে করে রোগের কারণকে সমূলে বিনাশ করা যায়। হোমিওপ্যাথিক ওষুধ শরীরের নিজস্ব নিরাময় ক্ষমতাকে উদ্দীপিত করে, শক্তিশালী করে। এভাবেই আরোগ্য প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।
অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতি হোমিওপ্যাথিক পদ্ধতির ঠিক বিপরীত অবস্থানে। যেমন- এ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতি অন্তর্নিহিত কারণগুলি মুছের ফেলার জন্য লক্ষণগুলিকে দমন করে যার মাধ্যমে মূলতঃ শরীরের নিজস্ব নিরাময় প্রক্রিয়াকে তার কাজে হস্তক্ষেপ করে বাঁধাগ্রস্থ করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, ব্যথার ওষুধ বা পেইন কিলার মস্তিষ্কে ব্যথার অনুভূতি বা বার্তা প্রেরণ বন্ধ করে দেয়। এর ফলে যতক্ষণ ব্যথার ওষুধের কার্যকারিতা থাকে শরীর ব্যথার অনুভূতি পায়না। ওষুধের কার্যকারিতা শেষ হওয়া মাত্র ব্যথা ফিরে আসে। অনবরত ব্যথার ওষুধ প্রয়োগে ব্যথা জটিলতা প্রাপ্ত হয়, আর ওষুধের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ অংগ যেমন কিডনী-লিভার-ফুসফুস ইত্যাদি আক্রান্ত হয়ে জটিল রোগের সৃষ্টি করে। আবার, কাশি দমনমূলক ওষুধ শ্লেষ্মা নির্গমন বন্ধ করে দেয় যাতে রোগী সাময়িক উপশম বোধ করে। কিন্তু এতে করে শ্লেষ্মা না বেরিয়ে বরং ফুসফুসে জমা হতে থাকে। ফলতঃ ফুসফুস ব্যাক্টেরিয়ার জন্য আরো অনুকুল পরিবেশে রূপান্তরিত হয়। এভাবে সকল রোগেরই দমনমূলক চিকিৎসা চলে এ্যালোপ্যাথিকে। কারণকে দূর না করে ফলাফলকে দমন করা হয়।
পক্ষান্তরে, হোমিওপ্যাথিক ওষুধ সম্পূর্ণ পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া ব্যতীত অন্তর্নিহিত কারণ দুর করে রোগীকে সম্পূর্ণরূপে আরোগ্য করে। উপরোক্ত ব্যথা বা কাশি দমনের জন্য এ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা মুলত একই ধরণের। অর্থাৎ ব্যথানাশক বা শ্লেষ্মা দমনমূলক। যার সাথে এখনকার ডাক্তারেরা এ্যান্টিবায়োটিকের ব্যাপক ব্যবহার করছেন। কিন্তু লক্ষণভেদে রোগীর হোমিও চিকিৎসার ক্ষেত্রে পৃথক পৃথক যে কোন ওষুধই নির্বাচিত হতে পারে। লক্ষণ একই জাতীয় মনে হলেও তার কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রে পৃথক। আর চিকিৎসায় কেবল ব্যথা বা কাশির লক্ষণ নয়; সার্বিকভাবে রোগীর যাবতীয় শারীরিক-মানসিক অবস্থাও বিবেচনা করা হয়।
ডাঃ বেনজীর। হোমিওপ্যাথ। এ্যাপায়েন্টমেন্ট গ্রহণ সহ যে কোন প্রয়োজনে ফোন দিনঃ ০১৭৩৩৭৯৭২৫২। আরো জানতে ভিজিট করুনঃ
drbenojir.com/contact/
- লিখেছেন ডা. বেনজীর
- আপডেট : ফেব্রুয়ারী ১৭, ২০১৯
- 0 মন্তব্য
0 মন্তব্য