
স্পন্ডাইলোসিসস বলতে মেরুদন্ডের অবক্ষয়জনিত পরিবর্তনগুলিকে বোঝায় যেমন হাড়ের স্পার বা অস্টডিওফাইট গঠন এবং মেরুদন্ডের মধ্যে আন্ত:ভার্টেব্রাল ডিস্কের অবক্ষয়। যদি এটি কটি দেশীয় অঞ্চলে হয় তবে এটিকে কটিদেশীয় স্পন্ডাইলোসিস (lumbar spondylosis) বলা হয়।
লাম্বার স্পন্ডিলোসিসের লক্ষণ:
স্থানীয় ব্যথা, দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার পর ব্যথা, বারবার নড়াচড়ার পরে ব্যথা বৃদ্ধি পাওয়া,
পেশী আক্ষেপ (spasms), কোমলতা (Tenderness), অংগের অসাড়তা (numbness)।
লাম্বার স্পন্ডাইলোসিসে হোমিওপ্যাথির ভূমিকা:
অবক্ষয় হল লাম্বার স্পন্ডইলোসিসের প্রধান কারণ। হোমিওপ্যাথিক ওষুধের দ্বারা অবক্ষয়ের আরো অগ্রগতি রোধ করার চেষ্টা করা হয় এবং নির্দিষ্ট পরিমাণে ক্ষতি হ্রাস করে এর যত্ন নেয়া হয়। কটিদেশীয় স্পন্ডাইলোসিসের জন্য হোমিওপ্যাথিক প্রতিকারগুলোর জয়েন্টগুলিতে, মেরুদন্ডের লাম্বো স্যাক্রাল অঞ্চল (lumbo sacral region) এবং তরুণাস্থির (cartilage) উপর বিশেষ প্রভাব রয়েছে। স্ফীত জয়েন্টগুলিতে ভাল সহায়তা প্রদান এবং জটিলতা প্রতিরোধ করার জন্য ওষুধ লিগামেন্ট এবং তরুণাস্থি শক্তিশালী করতে সহায়তা করে। কিছু নির্দিষ্ট রোগীর মধ্যে জেনেটিক প্রবণতা এবং প্রাথমিক অবক্ষয়জনিত পরিবর্তনের কারণে অল্প বয়সে কটিদেশীয় স্পন্ডাইলোসিস পরিলক্ষিত হয়। হোমিওপ্যাথিক প্রাথমিক অবক্ষয় প্রক্রিয়াকে আটকে দিয়ে এই ধরণের ক্ষেত্রে চমৎকারভাবে কাজ করে। টিস্যু সল্ট সহ কিছু হোমিওপ্যাথিক ওষুধ ভংগুর হাড়ের গঠনকে ভাংগতে বাধা দেয় এবং তরুণাস্থিগুলির নিরাময় নিশ্চিত করে।
সাধারণ অস্টিওসাইট গঠনের সাথে কটিদেশীয় স্পন্ডলোসিসের কেসের সংক্ষিপ্তসার:
একজন মধ্যবয়সি রোগীর পিঠের নীচের তীব্র ব্যথার কারণে তাকে অস্থিরভাবে বসে থাকতে হয়। এক্সরে-তে অস্টিউফাইট গঠনের সাথে কটিদেশীয় স্পন্ডাইলোসিসের প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দেয়।
তার পেশায় তাকে দীর্ঘক্ষণ ধরে বসে বা ঝুঁকে দাড়িয়ে কাজ করতে হয়। তিনি শারীরিক গঠনে চর্বিহীন এবং ভাল উচ্চতার অধিকারী ছিলেন। ব্যথা তীব্র হওয়ায় তিনি কোন লক্ষণ বর্ণনা করতে ততোটা সক্ষম ছিলেন না। তিনি অনেক দুর্বলতা অনুভব করছিলেন। ক্লিনিক্যাল রিপোর্ট, তার সার্বিক লক্ষণ ও আমাদের পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে তাকে ওষুধ দেয়া হয়েছিল।
রোগীর শারীরিক গঠন, দুর্বলতা ইত্যাদি বিবেচনায় এসিড ফস দিয়ে তার চিকিৎসা শুরু করা হয়। এক সপ্তাহের ভেতর তার ব্যথা স্থির হয়ে যায় এবং সামনের দিকে ঝোকার সময় ”চিমটি কাটার” মত ব্যথা অনুভূত হয়। এ পর্যায়ে তাকে ক্যাল্কে ফ্লোর প্রেসক্রাইব করা হয়। সর্বশেষ তাকে ক্যাল্কেরিয়া কার্ব দিয়ে পূর্ণ আরোগ্য করা হয়।
উল্ল্যেখ্য ক্যাল্কেরিয়া কার্বের কটিদেশীয় অঞ্চলে অস্টিওফাইটের উপসর্গ রয়েছে। দীর্ঘক্ষণ দাড়িয়ে কাজ করায় পিঠের নিচের দিকে ব্যথাও এতে আরোগ্য হয়। আর ক্যাল্কে ফ্লোরে হাড়ের অতিরিক্ত বৃদ্ধির লক্ষণ স্পষ্ট।
রোগীকে ৬ মাস চিকিৎসা দেয়ার পর তার লাম্বার স্পন্ডিলাইটিস সম্পূর্ণ নিরাময় হয়।