লক্ষণের হ্রাস-বৃদ্ধি ও সফল চিকিৎসা (Modalities_successful_Prescribtion):

হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার সফলতা বহুলাংশে নির্ভর করে কোন কৌশল অবলম্বন করে করে আমরা রোগীর কেসটি নিষ্পত্তি করছি বা প্রেসক্রাইব করছি তার উপর। সবচেয়ে সহজ ও বহুল ব্যবহৃত একটি উপায় হলো রোগ/ লক্ষণের হ্রাস-বৃদ্ধির ধরণ (modalities) বিবেচনা করে প্রেসক্রাইব করা।

হ্রাস-বৃদ্ধিও (modalities) নানান ধরণের। যেমন:

সময় সংক্রান্ত হ্রাস বৃদ্ধি (time modality): এখানে সময়ের পরিবর্তনে লক্ষণের হ্রাস-বৃদ্ধি হয়। যেমন- সুর্যোদয়, সুযাস্ত, দিন-রাত-দুপুর-সকাল, ঘুম হতে উঠে, ঘুমের ভেতর বা ঘুম থেকে জেগে ওঠার পর, সুনির্দিষ্ট সময় যেমন – রাত- ৩-৫টা, সকাল ১১টা, বিকাল ৪- রাত ৮টা ইত্যাদি।

ঋতু সম্পর্কীত হ্রাস-বৃদ্ধি (seasonal modality): যেমন- গরম-ঠান্ডা, ঋতুর পরিবর্তন, শীত-গ্রীষ্ম-শরতে লক্ষণের হ্রাস-বৃদ্ধি।

আবহাওয়ার তারতম্যে লক্ষণের হ্রাস-বৃদ্ধি (weather modality): মেঘলা আকাশ, স্যাঁতস্যাতে পরিবেশ, শুকনো/রোদ্দোজ্জল, ভিজা আবহাওয়ায় লক্ষণের হ্রাস-বৃদ্ধি।

গতিবিধির পরিবর্তন (locomotion modality): চলাফেরার ধরণ, যেমন- হাটা, বসা, সিঁড়ি দিয়ে উঠা-নামা, বসা হতে উঠা, সামনে-পিছনে ঝুঁকে পড়া ইত্যাদি।

তাপমাত্রার হ্রাস-বৃদ্ধি (thermal modality): তাপ (শুকনো/আদ্র বা ভিজা তাপ), ঠান্ডা (শুকনো/ ভিজা ঠান্ডা)।

খাদ্য-পানীয়ে হ্রাস-বৃদ্ধি (food & drinks modality): নির্দিষ্ট খাদ্য-পানীয়ে লক্ষণের হ্রাস বা বৃদ্ধি। যেমন-মিষ্টি, লবণ, মশলাদার খাবার, টক, বিভিন্ন ধরণের কাঁচা/পাঁকা ফল, মুরগী, বাদাম জাতীয় খাবার, তৈলাক্ত খাবার, ভাঁজাপোড়া, আলু, ভাত-রুটি, পেষ্ট্রি-কেক, ঠান্ডা বা গরম খাবার ও পানীয়, চা-কফি ইত্যাদি।

বাহ্যিক উদ্দীপনা (external stimuli): কাশলে কাশির বৃদ্ধি, ঘেমে গিয়ে কাশির শুরু, মাসিকের আগে-সময়ে-পরে হ্রাস বৃদ্ধি, ঘ্রাণে হ্রাস-বৃদ্ধি, শব্দে হ্রাস-বৃদ্ধি ইত্যাদি।

মানসিক বা মনত্বাত্ত্বিক কারণ (mental or psychological factors): মানসিক চাপ (stress), প্রেমে ব্যর্থতা, হতাশা, রাগ, দু:শ্চিন্তা, কান্নাকাটি।

রোগীর কেস গ্রহণের সময় হ্রাস-বৃদ্ধির প্যাটার্ণটি ভালভাবে জানতে পারলে সফলভাবে অতি দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত করা যায় ও রোগী অচিরেই আরোগ্য লাভ করে।