Complexity of gallstone surgery

Gallstone is easily treatable with homeopathic medicine

গলব্লাডারস্টোন রোগে অনেকেই ভুগছেন। পাথর তথা গলব্লাডার অপারেশনের অনেক ঝুঁকি এবং অপারেশন পরবর্তী জটিলতা রয়েছে। হোমিওপ্যাথি গলস্টোনের চিকিৎসায় অত্যন্ত কার্যকর।

গলষ্টোন ২ ধরণের যেমন – কোলেস্টেরল স্টোন এবং পিগমেন্ট স্টোন।

পিত্তথলির পাথরের কারণ:

  1. অতিরিক্ত কোলেস্টেরল: পিত্তের উপাদানগুলি ভারসাম্যহীন থাকলে বিশেষ করে কারো অতিরিক্ত কোলেস্টেরল থাকলে তা কোলেস্টেরল পাথর তৈরি করে।  
  2. পিত্তের সংমিশ্রণ: পিত্তের মধ্যে খুব বেশি বিলিরুবিন থাকলে তা পিগমেন্ট পাথর গঠন করে।
  3. গলব্লাডারের গতিশীলতা: যদি পিত্তথলি সঠিকভাবে খালি না হয় বা যদি এটি দক্ষতার সাথে সংকুচিত না হয়, তাহলে পিত্ত ঘনীভূত হয়ে পাথর জন্মে।   
  4. স্থূলতা: স্থূলতা বিপাকীয় বিশৃংখলা সৃষ্টি করে পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।
  5. দ্রুত ওজন হ্রাস: খুব দ্রুত ওজন হ্রাস করা গলস্টোনের ঝুঁকি বাড়ায়।
  6. গর্ভাবস্থা: এসময় হরমোনের পরিবর্তনে গলস্টোনের ঝুঁকি বাড়ে।

গলস্টোনের উপসর্গ: পিত্তপাথর প্রাথমিক অবস্থায় তেমন উপসর্গ সৃষ্টি করেনা। সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:

  1. ব্যথা: ডানদিকের উপরের পেটে তীব্র ব্যথা যা প্রায়শই পিঠের দিকে  সম্প্রসারিত হয়। এই ব্যথাকে বিলিয়ারি কলিক বলা হয়।
  2. ব্যথার কারণে বমি বমি ভাব এবং বমি হয়।
  3. জন্ডিস: পাথর পিত্ত নালীকে ব্লক করলে জন্ডিস দেখা দেয়।   
  4. জ্বর: পিত্তপাথরের সাথে রোগীর জ্বর হতে পারে।

এ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা cholecystectomy ও Laparoscopy ই প্রধান চিকিৎসা। আর সার্জারির ঝুঁকি থাকলে ডাক্তার ওষুধ হিসেবে –

  1. Ursodeoxycholic Acid (UDCA) –
  2. Chenodeoxycholic Acid (CDCA)

প্রেসক্রাইব করেন যার উদ্দেশ্যে ছোট পাথর গলিয়ে ফেলা। দীর্ঘদিন ধরে সেবনে কিছুটা কার্যকরি হলেও পুনরায় পাথর দেখা দেয়। তাই ডাক্তারের পছন্দ ল্যাপারেস্কপি করে পাথর অপসারণ করা বা পুরো গলব্লাডার রিমুভ করা।

অপারেশন পরবর্তী জটিলতা:

  1. হজমের গোলযোগ সহ ঘন ঘন পাতলা মলত্যাগ।
  2. বাইল রিফ্লাক্স বা পিত্তের বিপরীত মুখী প্রবাহের কারণে স্টমাকে অস্বস্তি, বুকে ব্যথা, ইরিটেশন থাকে।
  3. চর্বিযুক্ত খাদ্য হজম কঠিন হওয়ায় গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল অস্বস্তি হতে পারে।
  4. কোলন ক্যান্সারের বর্ধিত ঝুঁকি দেখা দেয়।
  5. পোস্টকোলেসিস্টেকটমি সিন্ড্রোম: পেটব্যথা, ফোলাভাব, গ্যাস হয়।
  6. ডায়রিয়া: পেটে জ্বালা সহ ডায়রিয়া
  7. পুষ্টি শোষণ: ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে – এই নির্দিষ্ট পুষ্টির শোষণকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে।
  8. দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্যের প্রভাব: কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি বাড়ে।

পিত্তথলির হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাঃ হোমিওপ্যাথিতে পিত্তপাথর নিরাময়ের জন্য রয়েছে ৪৯ টি ওষুধ। এছাড়া গলস্টোন কলিকের জন্য রয়েছে ৪১ টি ওষুধ। Individualization তথা ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য নির্ণয়ই কার্যকর চিকিৎসা দানের প্রধান কৌশল।

৫ টি ওষুধের লক্ষণ সংক্ষিপ্তাকারে বর্ণনা করলে আপনাদের স্পষ্ট ধারণা হবে।

  1. চেলিডোনিয়াম: পিত্তনালীতে কোন বাঁধা (obstruction) এবং জন্ডিসের কারণে ব্যথা হলে এটি সর্বোত্তম ওষুধ। এর মূল লক্ষণ ডান কাঁধের নিচে ব্যথা। জন্ডিসে ত্বক হলুদ, প্রস্রাব গাঢ় এবং মাটি রংয়ের মল দেখা যায়। জিহ্বা হলুদ ও ফ্লাবি (থলথলে) হয়ে থাকে। বমি বমি ভাব ও বমি হয়। রোগীর গরম পানীয়ের আকাংখা থাকতে পারে। গর্ভাবস্থায় গলব্লাডারের লক্ষণের জন্য অত্যন্ত উপকারি।
  2. লাইকোপডিয়াম: গ্যাস্ট্রিকের উপসর্গসহ পিত্ত পাথরের জন্য ব্যবহৃত হয়। এসিডিটির জন্য সামান্য আহারে পেট ফেঁপে উঠে। সামান্য আহারে পেট পরিপূর্ণ হওয়ার অনুভূতি। কষ্ট করে গ্যাস বের করতে হয়। স্টার্চিফুড যেমন – আলু, রুটি, ভাত, পাস্তা, সিরিয়াল ও ফ্লাটুলেন্ট ফুড যেমন – দুধের তৈরী খাবার, শুষ্ক খাবার, আপেল, বীজ জাতীয় খাদ্য – ডাল, বাদাম, বুট, শীমের বীজ ইত্যাদিতে লক্ষণ বৃদ্ধি পায়। রোগীর মিষ্টান্ন আহার ও গরম পানীয়ের জন্য অস্বাভাবিক আকাংখা থাকে।
  3.  ক্যালকেরিয়া কার্ব: স্থুলদেহী বা ওবেজ পেশেন্টদের জন্য সবচেয়ে উপযোগী – যাদের শরীর থলথলে ও মেদবহুল। এরা অতিরিক্ত ঘামেন বিশেষ করে মাথায়। ঠান্ডা বাতাসে এরা খুবই সেনসিটিভ। সিদ্ধ ডিম, কিছু অদ্ভুদ দ্রব্য যেমন – চক, পেন্সিল, চুন খাওয়ার অদম্য আগ্রহ। রোগী গরম খাবার পছন্দ করেন অথচ ঠান্ডা পানীয়ে ঝোঁক অধিক। গলস্টোনের কারণে এজাতীয় রোগীর টক ঢেঁকুর বা টক বমি হয়।
  4. কার্ডুয়াস মেরিনাস: স্ফীত বা ইনফ্লেমড্ পিত্তথলির জন্য ব্যবহৃত হয়। যকৃত অঞ্চলে তথা ডান উপরের পেটে ব্যথা হয়। বমি বমি ভাব বা জ্বালাকর তরল বমি হয়।
  5. ফসফোরাস: খাওয়ার পর টক ঢেঁকুর বা উদগার (belching) এবং বমি হয়। রোগী ঠান্ডা পানীয়, আইসক্রিম, মুরগীর মাংস ও মাছ পছন্দ করে। জন্ডিসের চিকিৎসাতে এটা ব্যবহার করা হয় – যখন মল অতি দু্র্গন্ধযুক্ত এবং মলত্যাগের পর রোগী অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েন।

শেষ করার আগে তাদের জন্য পরামর্শ যারা ইতিমধ্যে গলব্লাডার অপসারণ করেছেন এবং গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণ সহ নানান উপসর্গে ভুগছেন। আপনারা হতাশ হবেন না।

যাদের অপারেশনের পর অ্যাসিডিটি, পেট গ্যাসে ফুলে যাওয়ার অনুভূতি আছে তাদের জন্য লক্ষণ সাদৃশ্যে প্রাকৃতিক ওষুধগুলির অন্যতম হল -Raphanus, Natrum Phos এবং Carbo Veg।

র‍্যাফানাস পিত্তথলি অপসারণের পরে পেটে অতিরিক্ত গ্যাসের চিকিৎসার জন্য দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে ব্যবহার করা যেতে পারে। এর অন্যান্য লক্ষণ থাকতে হবে।

ন্যাট্রাম ফস: গ্যাস উপর-নীচ কোন দিকেই বের না হওয়ায় যাদের পেট ফুলে যায় তাদের জন্য নেট্রাম ফস। এর রোগীর এসিডিটি সহ টক ঢেকুর তোলে এবং টক বমি হয়।

কার্বো ভেজ হল গ্যাস জমার কারণে পেটের প্রসারণ সহ পেটে জ্বালাপোড়ার আদর্শ ওষুধ। এই ধরনের রোগীদের হজমপ্রক্রিয়া খুব দুর্বল এবং ধীরগতি সম্পন্ন।

এমন আরো বহু ওষুধ আছে হোমিওপ্যাথিতে।

By drbenojirbd

Dr. Benojir is Director at Bangladesh Public Administration Training Center. He is practicing Classing Homeopathy. He is trained by the world's best Homeopath Prof. George Vithoulkas and eminent Indian Homeopath Farokh J Master, MD, PhD. Dr. Benojir is practicing classical homeopathy since last 25 years. He consult patient in-person and online.

Need Help?

Discover more from Dr. Benojir

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading